উচ্চ ফলনশীল রাবারের ক্লোন আমদানি করে উৎপাদন বাড়াতে চাই সরকার

Pioneer

কামরুল ইসলাম বাবু ঃ

উচ্চ ফলনশীল রাবারের ক্লোন আমদানি করে রাবার উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যনিতে কাছ করছে বর্তমান  সরকার। এরই প্রেক্ষিতে ভারতের রাবার বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম সফরে এসেছেন। প্রতিনিধি দলটি রাবার বাগান, রাবার প্রক্রিয়াকরণ, মেয়াদোত্তীর্ণ রাবার গাছ দিয়ে ফার্ণিচার তৈরি কারখানা পরিদর্শন করবেন। একইসাথে রাবার চাষ ও শিল্পের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলবেন।

 

১৯৮০-৮১ সালে মালয়েশিয়া থেকে চারা আমদানি করে বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে রাবার বাগান সৃজন করা হয়। চার দশকের বেশি সময়ের আগে আমদানিকৃত রাবার ক্লোন গাছের বার্ষিক উৎপাদন প্রতি গাছে মাত্র ৩০০ থেকে ৩৫০ কেজি। অথচ বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ু রাবার চাষের অত্যন্ত উপযোগী। উচ্চ ফলনশীল ক্লোন চারা ব্যবহার করলে  প্রতিটি গাছে সর্বোচ্চ তিন হাজার কেজি পর্যন্ত রাবার শীট উৎপাদন হবে।

 

বর্তমানে উচ্চ ফলনশীল ক্লোন বা বাডের অভাবে বাংলাদেশের রাবার চাষ ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার উচ্চ ফলনশীল রাবারের ক্লোন আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। তারই আলোকে গত ২৭ এপ্রিল ভারতের রাবার বোর্ডের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা চট্টগ্রামে আসেন। বাংলাদেশ রাবার বোর্ড এই প্রতিনিধি দলের সমন্বয় করছে।

 

বাংলাদেশ রাবার বোর্ড সূত্র জানায়, ভারতের রাবার বোর্ডের প্রতিনিধি সদস্যরা  ২৯ এপ্রিল সকালে এশিয়ার বৃহত্তম রাবার বাগান ফটিকছড়ির দাঁতমারা রাবার বাগান পরিদর্শন করেন। এরপর প্রতিনিধি দলটি একই উপজেলার কাঞ্চননগর রাবার বাগান পরিদর্শন করেন। বিকেলে নগরীর কালুরঘাট এলাকার ফরেস্ট ইন্ড্রাস্ট্রিজ ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন পরিদর্শন করেন। ৩০ এপ্রিল  প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ রাবার বোর্ড, বিএফআরআই, বিএফআইডিসি, রাবার মালিক সমিতি, রাবার শিল্প মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করবেন।

 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) সৈয়দা সারওয়ার জাহান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে ৫৭ হাজার হেক্টর জমিতে রাবার চাষ রয়েছে। চাষকৃত প্রতিটি গাছে বার্ষিক উৎপাদন মাত্র ৩০০ থেকে ৩৫০ কেজি। কিন্তু ভারত, শ্রীলংকা, সিংগাপুর, পাপুয়া নিউগিনি, ভিয়েতনামসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উচ্চ ফলনশীল ক্লোনের কারণে প্রতিটি গাছে সর্বোচ্চ তিন হাজার কেজি পর্যন্ত রাবার শীট উৎপাদন হচ্ছে। তাতে তারা লাভবান হচ্ছে বেশি।

 

এ অবস্থায় বাংলাদেশের রাবার শিল্পের উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছে বাংলাদেশ রাবার বোর্ড। বিদেশ থেকে উচ্চ ফলনশীল ক্লোন আমদানি করতে জোরালোভাবে আমরা কাজ করছে। তারই আলোকে ভারতের রাবার বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের সদস্যরা চট্টগ্রামে এসেছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারত থেকে ক্লোন আমদানি করে চারার নার্সারি করে রাবার চাষ করা হবে। এরপর ৮ বছরের মাথায় উৎপাদনে গেলে দেশে  রাবার উৎপাদন বহুগুন বৃদ্ধি পাবে।’

AL Sheraz