রাউজানে নোয়াজিষপুর ইউনিয়নে জীবন রক্ষার দানবক্স

Pioneer

মীর আসলাম (রাউজান নিউজ)ঃ

ইউনিয়ন পরিষদের ভিতর বড় একটি কাঁচের বক্স। স্বচ্ছ এই বক্সের ভিতর পরতে পরতে বিভিন্ন মূল্যমানের কাগজের নোট। দেখে অনুমান করা যায় ভিতরে পনের থেকে বিশ হাজার টাকা হতে পারে বাক্সে। পরিষদ ভবনের চেয়ারম্যানের কক্ষে সংরক্ষিত এই বাক্সটি মধ্যে এক ব্যক্তি এসে ফেললেন পাঁচ শত টাকার একটি কচকছে নোট। কিছুক্ষণ পর দিন মজুর শ্রেণির এক লোক এসে ফেলন একটি দশ টাকা। এই দৃশ্য রাউজান উপজেলার ১৪ নং নোয়াজিশপু ইউনিয়ন পরিষদে।

২৪ মে শুক্রবার বাদ জুমা চেয়ারম্যান সরোয়ার্দ্দি সিকদার তার পরিষদে ডেকে ছিলেন কয়েকজন রোগান্ত ব্যক্তিকে। তাদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও ছিল। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে পায়ে ক্ষতধরা বিভূতি রঞ্জন নামে এক ব্যক্তির। জটিল রোগে আক্রান্ত ছয় বছর বয়সী নুসরাত খান নাভিল। এক অভিভাবক শিশুটিকে নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। এরকম অসুস্থ্য আরো কয়েকজন নারীও তাদের সাথে। তাদের এক এক করে ডাকলেন চেয়ারম্যান সরোয়ার্দ্দি তার কক্ষে। তাদের সমস্যার কথা শুনলেন। এর ফাঁকে কয়েকজন যুবক কে বাক্সটি খুলে ভিতরের টাকা গুলো গুনে নিতে চেয়ারম্যান নিদ্দেশ দিলে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ে বাক্স খুলে টাকা গননার কাজে। এসবের মাঝে চেয়ারম্যানের সাথে আলাপে তিনি জানালেন গরীব আসহায় মানুষের চিকিৎসা সহায়তায় রাখা হয়েছে এই বাক্স। অনেকেই এই মানবিক বাক্সে টাকা ফেলেন। এর বাইরে রয়েছে নিজের টাকায় একটি মানবিক তহবিল আছে। এই তহবিল থেকে দুস্থদেও নানা কাজে সহায়তা করেন। তিনি একজনকে ডেকে কুশলাদি বিনিময়ের পর দিলেন অপারেশনের জন্য এক লাখ টাকা। অন্যান্যদেরকে দিলেন বিভিন্ন অংকে চিকিৎসা সহায়তা। এদিন সহায়তা পান ২২ জন।

চেয়ারম্যানের সাথে আলাপে জানা যায় গত ২০২২ সালের শেষের দিকে তিনি কাঁচের দানবক্সটি এখানে রেখেছেন। অনেকেই এসে মানবিক সহায়তায় বাক্সটিতে টাকা ফেলেন। আজ ৮জনকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার অর্থসহায়তা প্রদান করবেন বলে তিনি জানান। তিনি জানান রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি মানবিক বাক্সটির প্রথম উদ্বোধন করেছিলেন। তিনি এখানে আসলে এই বাক্সে টাকা ফেলেন। তিনি বিভিন্ন সময় মানবিক কাজে সর্বসাধারণকে সহায়তার আহ্বান জানিয়ে যান। তার আহ্বানেও একাজে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। জানা যায় চেয়ারম্যান সরোয়ার্দ্দির কাঁেচর বাক্সের টাকায় এ পর্যন্ত ২২ জনকে ৬ লাখ ৩৯ হাজার ০৯ টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। এই টাকার হিসাব তিনি একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে রাখেন।

AL Sheraz