চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) জীববিজ্ঞান অনুষদের পেছনের গ্রীনহাউস এলাকায় একটি ঘরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশি মদ (বাংলা মদ) ও বন্যপ্রাণী শিকারের সরঞ্জামসহ সুমন চাকমা (বয়স উল্লেখ নেই) নামে একজনকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আটক সুমন চাকমা দীর্ঘদিন ধরে জীববিজ্ঞান অনুষদের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিজ নেওয়া জমিতে বসবাস করছিলেন।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়ঃ

গ্রিনহাউসের ব্রিজের উত্তর পাশে বখতিয়ার ফকিরস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের লিজ নেওয়া জমিতে প্রায় ১৫ বছর ধরে সুমন চাকমা একটি ছোট বেড়ার ঘরে বসবাস করতেন। ঘরের পেছনেই তিনি একটি তাঁতকরা কাঠামো ব্যবহার করে চোলাই মদ তৈরির গোপন কারখানা গড়ে তুলেছিলেন।

চট্টগ্রামের আরো খবরঃ চট্টগ্রামে বালু বোঝাই ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

সম্প্রতি বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস ফ্যাকাল্টির পুকুর পাড়ে বহিরাগতদের সন্দেহজনক আনাগোনা এবং শিক্ষার্থীদের একাংশের নিয়মিত উপস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে আসে। গোপন অনুসন্ধানের পর মদের অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা এবং আগ্নেয়াস্ত্রের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী শিকারের অভিযোগের সত্যতা মেলে।

চবি সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন জানানঃ

সোমবার রাতে প্রক্টর (নাম উল্লেখ নেই), বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সুপারভাইজার নুরুদ্দীন ও মহিউদ্দিনসহ সাত-আটজনের একটি দল এই যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে সুমন চাকমা এবং তার সঙ্গে থাকা এক নারীকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুমন চাকমা জানান, ওই নারী তার স্ত্রী নন।

অভিযানকালে ঘটনাস্থল থেকে নিম্নলিখিত আলামতসমূহ জব্দ করা হয়:

• একটি ড্রামে সদ্য প্রস্তুত ৩০ লিটারের বেশি দেশি মদ।

• ৫ লিটারের একটি ডেক্সি।

• বোতলভরা ৫ লিটার প্রস্তুত মদসহ বড় আকারের মদ তৈরির সরঞ্জাম।

• মদ বিক্রি সংক্রান্ত হিসাবের খাতা ও অন্যান্য আলামত।

আরো খবরঃ ফটিকছড়িতে গাছে হাত গলা বাঁধা অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার

জিজ্ঞাসাবাদে সুমন চাকমা স্বীকার করেন যে তিনি বন্য শুকর, হরিণ, বন্য মুরগিসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী শিকার করতেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার জঙ্গল থেকে শিকার করা মাংস বাইরে বিক্রি করতেন বলেও জানান। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর একটি দল নিয়মিত তার কাছ থেকে মদ কিনতো বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আরো পড়ুনঃ চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু ভূমিকম্প: উৎপত্তিস্থল মিয়ানমার

অভিযান শেষে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে জব্দ করা আলামত সংগ্রহ করে। পরে পুলিশ সুমন চাকমাকে গ্রেপ্তার করে এবং তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে।

সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন নিশ্চিত করেছেন যে সুমন চাকমার বিরুদ্ধে নিম্নলিখিত গুরুতর অভিযোগে মামলা করা হয়েছে:

• মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন
• বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন
• অসামাজিক কার্যকলাপ

এছাড়াও, লিজ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিতে অবৈধ ও অননুমোদিত ব্যবসা পরিচালনার দায়ে সংশ্লিষ্ট লিজ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।