
শিক্ষা হোক আলোর পথ, আগামীর বাংলাদেশ গড়ুক যথোপযুক্ত – এই প্রতিপাদ্যে চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ায় ৬ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে ১ বছরের পড়ালেখার খরচ বহনে করার জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষা বৃত্তি-২০২৫ প্রদান করেছে আলহাজ্ব জসিম উদ্দীন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী ব্যবসায়ী আলহাজ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
১ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল থেকে বিকাল নোয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ বৃত্তি অনুষ্ঠান হয়। এতে রাউজানের প্রায় ১৫০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের পরিচালক আলহাজ জসিম উদ্দিনের বড় ভাই আলহাজ্ব মোহাম্মদ রফিক। আলহাজ জসিম উদ্দিন ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মাওলানা ফরিদুল ইসলাম আনসারী ও সাংবাদিক এস এম ইউসুফ উদ্দিনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিসান বিন মাজেদ।
ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দিয়ে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন জেলা শিক্ষক সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও নোয়াপাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মাস্টার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার অং ছিং মারমা, রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া, রাউজান উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সজল চন্দ্র চন্দ, ফাউন্ডেশনটির পরিচালক মোখতার আহমদ, আবু তাহের, ইয়াসিনুল হক, ফারুকে আজম, সরোয়ার হোসাইন, আহমদুল হক, খসরুল আমিন চৌধুরী, ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক জাহেদুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তব্য রাখেন গহিরা কলেজ অধ্যক্ষ আবু রায়হান, ইমাম গাজ্জালী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল জব্বার চৌধুরী, ইউনুছিয়া ফতহুল ইসলাম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শেহাব উদ্দিন, পূর্ব গুজরা মুহাম্মদীয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু মোস্তাক আল কাদেরী, রাউজান উপজেলা শিক্ষক সমিতির আহবায়ক জামাল শাহ, গহিরা স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাবিবুল হক, রাউজান আরআরএসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাক আহমদ, বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থী নাদিয়া ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রাউজানের নিরব এক রুপকারের গল্প শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয় ডিজিটাল পর্দায়। সেখানে ছিলো বৃত্তি প্রদান করা আলহাজ জসিম উদ্দিন ফাউন্ডেশনের গত ২৫ বছর ধরে করা সমাজ সেবামূলক উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্র।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এ ধরণের উদ্যোগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রবাসী ব্যবসায়ী আলহাজ জসিম উদ্দিনের মত একজন ব্যক্তি এত বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নিয়ে সারা বছরের জন্য বৃত্তি দেয়ার এই উদ্যোগে দেশে বিরল বলে মন্তব্য করেন বক্তারা। বক্তারা বলেন, জসিম উদ্দিন এই কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পারলে শিক্ষার হার বেড়ে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক কমে যাবে। পাশাপাশি দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের জীবন উন্নয়ন ঘটবে।
ভিডিও কনফারেন্সে শিক্ষা বৃত্তি প্রকল্পের উদ্যোক্তা আলহাজ জসিম উদ্দিন বলেন, শিক্ষার উন্নয়নের জন্য এবং খরচের অভাবে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে তিনি উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গরীব অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এ প্রকল্প স্থায়ীভাবে চালিয়ে নিতে চান৷ শিক্ষক এবং শিক্ষানুরাগীরা এ কার্যক্রমে তাঁকে সহযোগীতা করলে তিনি এ প্রকল্প চালু রাখবেন।
ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৬৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১১টি কলেজ ও ৩৫ মাদ্রাসার দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বেতন, পরীক্ষার ফিসহ যাবতীয় শিক্ষার খরচ বহন করবে এ ফাউন্ডেশন। এছাড়াও জসিম উদ্দিন স্মৃতি বৃত্তি প্রকল্পের সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের থেকে এইচএসএসি এবং আলিম পরীক্ষায় সারা রাউজানে সর্বোচ্চ বেশী নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে উচ্চ শিক্ষার সহায়তার জন্য ৩ লাখ টাকা, ২য় সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ২ লাখ টাকা এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ১ লাখ এবং এসএসসিতে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ২ লাখ টাকা, ২য় সর্বোচ্চ নম্বর পওয়া শিক্ষার্থীকে দেড় লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ তৃতীয় নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ১ লাখ টাকার এক কালিন বৃত্তি প্রদান করা হবে।
