ফিলিস্তিনকে মুছে দিতে ইসরাইলের ভয়াবহ চক্রান্তঃ গত নভেম্বরে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তথ্যানুসারে শুধু ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষই না বরং ইসরাইলি দক্ষতার বাহিনীর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা গুলো। ক্রমাগত বিমান হামলার মুখে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক বেশ কিছু মসজিদ। ঐতিহাসিক স্থাপনা সমূহের সংরক্ষণের জন্য কাজ করে এমন একটি স্প্যানিস সংস্থা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে যে ফিলিস্তিনের প্রায় ১০৪টিরও বেশি এরকম ঐতিহাসিক নিদর্শন ইসরাইলি দখলদারিত্ব ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়েছে। সেন্ট পোরফিরিয়াস হলো বিশ্বের তৃতীয় প্রাচীনতম গির্জা যা আনুমানিক ৪০৭ খৃস্টপূর্বে নির্মাণ করা হয়।
আন্তর্জাতিক সকল খবর পেতে ভিজিট করুনঃ আন্তর্জাতিক খবর
সেন্ট পোরফিরিয়াসে বোমা হামলার পরপরই হামলা করা হয় ওমারি মসজিদে। চৌদ্দশ বছরের পুরনো এই স্থাপনা বেশকিছু যুদ্ধ এবং ভূমিকম্পের পরও অক্ষত ছিল। কিন্তু ইসরাইলি দখলদার বাহিনী এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটিকেও রেহাই দেয়নি। তারা বোমা মেরে উড়িয়ে দেয় এই প্রাচীন ওমারি মসজিদটি। এই ঐতিহাসিক মসজিদের অসংখ্য গম্বুজ এর মধ্যে বর্তমানে একটি মাত্র মিনার অবশিষ্ট রয়েছে। গাজায় ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর আগ্রাসন শুরু হবার পর থেকে এরকম পরিণতির শিকার হয়েছে আরো অগণিত প্রাচীন স্থাপনার। সমগ্র গাজায় প্রায় ৩২৫টির মতো নিবন্ধিত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও স্থান রয়েছে।
ফিলিস্তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এর তথ্য অনুযায়ী গত ৭ই অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে পহেলা জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত এই ৩২৫ টি স্থাপনার মধ্যে ২০৭টি ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর আগ্রাসনের মুখে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ফিলিস্তিনের সংস্কৃতি মন্ত্রী আবুল অতীব সায়ীদ বলেন ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অতীত ঐতিহ্যকে ধ্বংস করছে। তারা তাদের সর্বশক্তি দিয়ে ফিলিস্তিনের জাতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহ কে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।যাতে ফিলিস্তিনের জাতির ইতিহাস মুছে দেওয়া যায়।
এভাবেই তারা ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদকে পরাজিত করতে চায়। ইউরোমেড হিউম্যান রাইটস মনিটর নভেম্বরে গাজার সংস্কৃতি ও ধর্মীয় স্থানে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা করে বলেঃ ইসরাইলি দখলদার বাহিনী গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের মানবিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে হিংস্রভাবে আক্রমণ করছে। এবং এই আক্রমণের অংশ হিসেবে গাজার মানুষদের অতীত ও ঐতিহ্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্বকারী স্থাপনাসমূহ ও স্থানগুলোতে হিংসাত্মক ভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। সেন্ট পোরফিরিয়াস গির্জাটি ছাড়াও অন্যান্য খ্রিষ্টান স্থাপনা ও ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর আগ্রাসন থেকে রক্ষা পায়নি।
গাজা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সেন্ট হিলারিয়ান মঠের ধ্বংসাবশেষ তেল উম আমের নামেই বহুল পরিচিত, এটিও ভীষণ হুমকির মুখে রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে এই অতি প্রাচীন স্থাপনাটি ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে। গাজা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে গাজা শহরে প্রাচীনতম বাজার শৌলজালিয়াতে অবস্থিত প্রত্নতত্ত্ব ভবনটিও প্রচুর প্রাচীন নথিপত্রসহ গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল দখলদার বাহিনী। সংস্কৃতি মন্ত্রী আরো বলেন এই যুদ্ধটি মূলত মানুষ এবং তাদের অতীত ঐতিহ্য ধ্বংস করার যুদ্ধ।
প্রধান সম্পাদকঃ মীর আসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশকঃ কামরুল ইসলাম বাবু, নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ ওসমান গনি