রাউজানের কোটি টাকার বালুব্যবসা ফেলে নিরুদ্দেশ আওয়ামীলীগ-যুবলীগ সিণ্ডিকেট

Pioneer

রাউজান নিউজ ডেক্স :

রাউজান উপজেলার দক্ষিণাংশের সীমানার সাথে কর্ণফুলী নদী ও হালদা নদী। দুটির নদীর পাড় ঘেঁষে থাকা রাউজানের লাম্বুরহাট,খেলারঘাটে গত প্রায় দেড় যুগ ধরে চলে আসছিল শত কোটি টাকার বালুব্যবসা। এখানে কোনো বালুমহাল ইজারা না থাকলেও দলীয় সরকারের ক্ষমতার প্রভাবে আওয়ামীলী,যুবলীগের ১২জনের একটি সিণ্ডিকেট এই ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতো। দলীয় সরকারের পতনের সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে তারা পালিয়েছে এলাকা থেকে। ফেলে গেছে পাহাড়সম উচ্চতার লাখ লাখ টাকার বালুপাহাড়। সরাতে পারেনি বালুপরিবহনের ট্রাক।

গত বুধবার বাগোয়ান ইউনিয়নের লাম্বুরহাট, খেলারঘাট এলাকায় গিয়ে দেখায় বালু পাহাড় পড়ে রয়েছে। আগের মত নেই বালুপরিবহনে থাকা ট্রাকের ছুটাছুটি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়,বালুর ট্রাকের চাপে এলাকার প্রায় সব রাস্তা বিধ্বস্ত। সড়ক উন্নয়নে কোটি টাকা খরচ করা হলেও বছর ঘুরতে আবার দেখতে হয়েছে রাস্তার ক্ষতবিক্ষত রূপ। অভিযোগ রয়েছে ক্ষমতার প্রভাবে বালুব্যবসায়ীরা বছরের পর বছর স্কুল,মন্দিরের জায়গা দখল করে বালুপাহাড় গড়ে ব্যবসা করে আসছিল। পরিবহন ট্রাকের উড়ন্ত বালুতে একাকার হতো রাস্তার পাশে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,বাড়িঘর। মারূফ হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী বলেছে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার সময় তাদের নাক মুখ ঢাকা পড়তো বালুতে।

নুরুল আজিম নামের স্থানীয় একজনের অভিযোগ বছরের পর বছর এখানকার মানুষ এমন পরিবেশে থাকলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। যারা প্রতিবাদ করেছে তাদেরকে দেয়া হয়েছে হুমকি ধমকি। আবার কেউ কেউ ছাড়তে হয়েছে এলাকা। সংবাদ মাধ্যমে এই নিয়ে মাঝে মধ্যে লেখালেখি হলে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা এসে অবৈধ এই ব্যবসা বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়ে যেতেন। তবে কোনো সময় বন্ধ থাকেনি বালুর ব্যবসা। পরিদর্শনে দেখা যায় বাগোয়ান ইউনিয়নের লাম্বুরহাট-কোয়েপাড়া, ব্রাহ্মনহাট পাঁচখাইন, ধরের টেক-মাঝিপাড়া সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের ক্ষতবিক্ষত রূপ।

খবর নিয়ে জানা যায় এখানে বালুব্যবসা চলতো কর্ণফুলী নদীতে জেগে উঠা চর কেটে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলতে গেলে সফর মুল্লুক নামের একজন বলেছেন রাউজান-রাঙ্গুনিয়া-বোয়ালখালী ত্রি সীমানায় থাকা একটি চর থেকে এলাকার আওয়ামীলীগ যুবলীগের নেতারা নিয়ে এসে ব্যবসা করত। ওই চরের নিয়ন্ত্রক ছিলেন ক্ষমতাচ্ছুত আওয়ামীলীগ সরকারের পররাস্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদের স্বজনরা। তাদের সাথে ব্যবসায়ীক চুক্তিতে রাউজানের সরকার দলীয় প্রভাবশালীরা এই বালুব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। নুরুল হক নামের অপর এক ব্যক্তি বলেছেন এখানে বালুর ব্যবসায়ীদের উৎপাতে অতিষ্ট ছিল সাধারণ মানুষ। বালু ব্যবসায়ীদের ট্রাক এলাকার প্রায় রাস্তা ধসে দিয়েছে। তার প্রশ্ন আওয়ামীলীগ-যুবলীগ সিন্ডিকেট নিজেদের আখের গুঁছাতে গিয়ে এলাকার রাস্তাঘাট ধংস করে এখন জনরোষে পড়ার আশংকায় এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এলাকাবাসী এখন দেখার অপেক্ষায় আছে ক্ষমতা পরিবর্তনে এই বালুব্যবসার নিয়ন্ত্রণ কারা নেয়। এবিষয়ে জানতে চাইলে রাউজান উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমি রিদোয়ানুল ইসলাম বলেন ওই বালুব্যবসা বন্ধে প্রশাসন বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছে। বৃষ্টি কমলে ওই এলাকা পরিদর্শন করে দেখব কোথায় কি অবস্থা। জমা থাকা বালুজব্দ করা হবে বলে তিনি জানান।

AL Sheraz