

রেকর্ডের পাতায় চট্টগ্রামঃ দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। তবে এবার যেন সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেল বীর প্রসবিনী চট্টগ্রাম। রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের চাকা সচল রাখা এবং শিল্প খাতে বিনিয়োগের স্বীকৃতি হিসেবে সরকার ঘোষিত ৮৬ জন সিআইপির (অনিবাসী বাংলাদেশি) মধ্যে একাই ৩৪ জন চট্টগ্রামের। প্রবাসীদের এই অভাবনীয় সাফল্যে এখন গর্বিত পুরো জেলা।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য এই সিআইপি নির্বাচনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর ঢাকায় ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে তাঁদের হাতে এই মর্যাদাপূর্ণ সনদ তুলে দেওয়া হবে।
সরকার মোট তিনটি বিভাগে এই বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি (NRB) নির্বাচন করেছে:
-
বিনিয়োগকারী: শিল্পক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগকারী ১ জন।
-
রেমিট্যান্স প্রেরক: বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো ৭৫ জন।
-
পণ্য আমদানিকারক: বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিকারক ১০ জন।
বরাবরের মতোই সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীরা সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি। এই দেশটি থেকেই সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন ৪১ জন। এছাড়া ওমান থেকে ৭ জন, যুক্তরাজ্য থেকে ৬ জন, এবং আমেরিকা ও কাতার থেকে ৫ জন করে নির্বাচিত হয়েছেন। তালিকায় রয়েছে সৌদি আরব, হংকং, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলোও।
চট্টগ্রাম জেলার ৩৪ জন সিআইপির মধ্যে উপজেলার দিক থেকে শীর্ষস্থান দখল করেছে হাটহাজারী (৯ জন) এবং দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাউজান (৮ জন)। এছাড়া সাতকানিয়া ও নগর এলাকা থেকে ৫ জন করে, পটিয়া ও ফটিকছড়ি থেকে ২ জন করে এবং বোয়ালখালী, সীতাকুণ্ড ও চন্দনাইশ থেকে ১ জন করে প্রবাসী এই সম্মাননা পেয়েছেন।
কয়েকজন বিশিষ্ট সিআইপি: হাটহাজারীর মোহাম্মদ রুবেল, রাউজানের ফরিদুল আলম, পটিয়ার মুহাম্মদ আবুল বশর, সীতাকুণ্ডের মো. মহিউদ্দীন বহদ্দা চৌধুরী এবং সাতকানিয়ার শফিকুল ইসলাম রাহীসহ আরও অনেকে এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন।
নির্বাচিত সিআইপিরা আগামী দুই বছর (১৪ ডিসেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত) রাষ্ট্রীয় নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন:
-
বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের পাস।
-
জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ।
-
বিমান, রেল ও সড়কপথে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার।
-
বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ‘চামেলী’ ব্যবহারের সুবিধা।
-
নিজের ও পরিবারের সুচিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন সুবিধা।
বিদেশে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের অর্থনীতিকে যারা সমৃদ্ধ করছেন, সরকারের এই স্বীকৃতি তাঁদের মনোবল আরও বাড়িয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

