হালদা থেকে সংগ্রহ করা ডিমে হবে ৩৫০ কেজি পোনা প্রথম দফায় বিক্রি করা যাবে সাড়ে তিন কোটির টাকা

Raozan IT

মীর আসলাম.॥

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত হালদা নদী থেকে সংগ্রহ করা মাছের ডিম থেকে পোনা রূপন্তরের ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে ডিম সংগ্রহকারীরা। সর্বশেষ পর্যায়ে মৎস্যজীবিরা নদী থেকে ১৪ হাজার কেজি মাছে ডিম সংগ্রহ করেছে বলে দাবি করেছে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার অফিস থেকে। মৎস্য কর্মকর্তার হিসাবে অনুসারে ৪০ কেজি ডিম থেকে এক কেজি পোনা উৎপাদন করা যায়। ১৪ হাজার কেজি ডিম থেকে পোনা উৎপাদন করা গেলে পোনা হবে সাড়ে তিন শ কেজি। হালদা পাড়ের মৎস্যজীবিরা বলেছেন বিগত বছর গুলোতে পোনা উৎপাদনের মাত্রা ছিল কম। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম ছিল বেশি। এবার ডিম পাওয়া গেছে বেশি। আগামী দুদিন সবকিছুঠিকঠাক থাকলে পোনা উৎপাদনও হবে বেশি।

 

 

সেই তুলনায় গত বারের চাইতে দাম কিছুটা কমতে পারে। মৎস্যজীবিরা বলেছেন গত বার সদ্য উৎপাদিত প্রতি কেজি (পানি সহ) পোনা বিক্রি হয়েছিল এক লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। চাহিদা হিসাবে এবারও এক লাখের উপড়ে থাকবে। পোনা উৎপাদনকারীদের আশা সবকিছুঠিকঠাক থাকবে আগামী মঙ্গলবার থেকে প্রথম দফায় বিক্রি উৎসব চলবে হালদা পাড়ে। প্রথম দফায় বিক্রি পর অবশিষ্ট পোনা পুকুর জলাশয়ে ফেলে বিক্রি করা হবে সারা বছর জুড়ে।

 

হালদার দুই পাড় রাউজান-হাটহাজারী এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে সরকারি বেসরকারি হ্যাচারী গুলোতে ডিম সংগ্রহকারীরা ব্যস্ততম সময় কাটাচ্ছে। হ্যাচারীর সিস্টেন সমূহে ডিম রেখে নাড়া চড়া করছে পোনা রূপান্তরের চেষ্টায়। কিছু কিছুডিম সংগ্রহকারী হ্যাচারীতে জায়গা না পেয়ে উঁচু জায়গায় মাটি কুয়ায় ডিম ফুটাচ্ছে। আবার কোনো কোনো ডিম সংগ্রহকারী আগে তৈরী করে রাখা মাটির কুয়া জোয়ারের পানিতে ডুবে যাওয়ায় উচু জায়গায় মাঁচার উপর মোটা ত্রিপল বসিয়ে সেখানে ডিম ফুটাচ্ছে। রাউজানের আজিমের ঘাট এলাকায় দেখা যায় মৎস্যজীবি রোশাঙ্গীর আলম এই ধরণের মাচার উপর ত্রিপল সাঁটিয়ে সংগ্রহ করা ডিম থেকে পোনা রূপান্তরের ব্যস্ততম সময় কাঠাচ্ছে। তিনি জানান ডিম ফুটানোর প্রস্তুতি হিসাবে আগেই চারটি মাটি কুয়া তৈরী করে রেখেছিলেন বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির চাপে তার সবকটি মাটির কুয়া ডুবে যাওয়ায় এখন বিকল্প হিসাবে মাচার উপর ত্রিপল সাঁটিয়ে পোনা উৎপাদন করার চেষ্টায় আছেন। তার আশা তিনি সফল হবেন।

 

হাটহাজারী গড়দুয়ার এলাকার মৎস্যজীবি কামাল সওদাগড় বলেছেন তিনি এবার ১০টি নৌকায় ৩৫ বালতি ডিম সংগ্রহ করেছেন। তার সংগ্রহ করা ডিম নিজস্ব উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত মিনি হ্যাচারীতে ফুটাচ্ছেন। এই প্রবীণ মৎস্যজীীবর আশা সবকিছ ঠিকঠাক থাকলে আগামী মঙ্গলবার থেকে হালদার পোনা বিক্রি শুরু হবে। হাটহাজারী উপজেলা সিনিয়ির মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল বলেছেন তার উপজেলার বিভিন্ন পয়ন্টে থাকা ডিম সংগ্রহকারীরা আট হাজার ৩৪০ বালতি ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন। তারা সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত ১৬টি হ্যাচারী ও ৬০টি মাটির কুয়ায় ডিম ফুটাচ্ছেন। এই পর্যন্ত পোনা উৎপাদনের কাজ ভালভাবে চলছে। মৎস্যবিভাগের লোকজন পোনা উৎপাদনকারীদের সব ধরণের সহযোগিতা দিচ্ছেন।

 

রাউজান উপজেলা সিনিয়ির মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেছেন রাউজানের মোবারকখীল হ্যাচারীতে পোনা উৎপাদন কাজে এখন ব্যস্ত ডিম সংগ্রহকারীগণ। তাদের সাথে সার্বক্ষণিক সময় দিচ্ছেন তিনিসহ তার বিভাগের লোকজন। এই মৎস্য কর্মকর্তার হিসাব অনুসারে চার বালতি অর্থাৎ ৪০ কেজি ডিম থেকে এক কেজি পোনা উৎপাদন করা যায়। এবার হালদা থেকে আহরণ করা ১৪ হাজার কেজি ডিম থেকে কমপক্ষে ৩৫০ কেজি পোনা উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

AL Sheraz