রাউজান নিউজ ডেক্স :
রাউজানে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারনে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে উপজেলার পশ্চিম নোয়াপাড়া, মোকামীপাড়া, সাম মাহালদারপাড়া, ছামিদর কোয়াং, কচুখাইন, দক্ষিণ নোয়াপাড়া; উরকিরচর ইউনিয়নের মইশকরম, সওদাগরপাড়া, সুজারপাড়া, পূর্ব উরকিরচর, খলিফার ঘোনা ও বৈইজ্জাখালি, বাগোয়ান, পশ্চিম গুজরা, গহিরা, নোয়াজিশপুর, চিকদাইর, ডাবুয়াসহ কয়েকটি গ্রামের অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে রয়েছেন।
২১আগস্ট বিকেলে হালদা নদীর তীরবর্তী নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ছামিদর কোয়াং, মোকামী পাড়া ও উরকিরচর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামে ঢোকার দুটি সড়ক কোমরসমান পানিতে ডুবে গেছে। গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবার অনেকটা ঘরবন্দী সময় কাটাচ্ছেন। এলাকার কয়েক শ একর চাষাবাদের জমি ৫ থেকে ৬ ফুট পানি নিচে ডুবে রয়েছে। পানির তোড়ে ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের কয়েকটি খুঁটি। এতে বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে আশপাশের গ্রাম।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হালদা নদীর হাটহাজারীর অংশে বেড়িবাঁধ দেওয়া হলেও রাউজান অংশে তা নেই। তাই অমাবস্যা-পূর্ণিমা তিথিতে জোয়ারের উচ্চতা বাড়ার কারণে গ্রামগুলোতে পানি ঢুকে পড়ে। এবার বৃষ্টির কারণে পানি আরও বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন তাঁরা।
রাউজানের ছামিদর কোয়াং গ্রামের বাসিন্দা সালামত উল্লাহ বলেন, তাঁদের গ্রামের প্রায় সব বাড়িঘর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক ভেঙে গ্রামের যোগাযোগব্যবস্থা বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। গাড়ি চলছে না।
মোকামীপাড়ার বাসিন্দা এস এম হাসান বলেন, তাঁর বাড়ির সামনে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পুকুরে ডুবে গেছে। বাড়ির বাসিন্দারা বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ভোগান্তির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, তাঁদের চলাচলের মূল সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় হেঁটে চলারও পথ নেই। মানুষজন লাঠিতে ভর করে কোনোরকমে আসা-যাওয়া করছেন।
এলাকার মাছের খামারি কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, তাঁরা কয়েকজন মিলে চারটি পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করেছেন। এসব পুকুরের একটিতেও কোনো মাছ অবশিষ্ট নেই। সব মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে তাঁদের পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা বলেন, রাউজানে নদীর পানি বেড়ে অনেক গ্রাম তলিয়ে গেছে। এর ফলে মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ক্ষতি হওয়ার খবর তাঁদের কাছে আসছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বরাদ্দ চাওয়া হবে।