
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী হাদি: ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান বিন হাদি এক ভয়াবহ হামলার শিকার হয়ে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে জীবন–মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তাঁর মাথায় গুলি লেগেছে এবং সেই বুলেটটি এখনও বের করা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকেরা তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন।
চিকিৎসকদের উদ্বেগ: লাইফ সাপোর্টে হাদি
ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন যে, গুলিবিদ্ধ শরীফ ওসমান বিন হাদির অবস্থা ‘ক্রিটিক্যাল’ এবং তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, “মাথার ভেতরেই বুলেটটি রয়েছে।”
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনার পরপরই হাদির শারীরিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে যায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় এবং তিনি শকে চলে যান। তাৎক্ষণিক সিপিআর দেওয়ার পর রক্তচাপ সাময়িকভাবে স্থিতিশীল হলেও চিকিৎসকেরা পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত গুরুতর’ বলে বর্ণনা করেছেন। তাঁকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
বাংলাদেশের সকল খবর সবার আগে পেতে ভিজিট করুনঃ বাংলাদেশের খবর
হামলার বিবরণ
শুক্রবার জুমার নামাজের পর আনুমানিক দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর বিজয়নগরের কালভার্ট রোড এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, তিনটি মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা হাদিকে গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ইস্রাফিল ফরায়েজী নিশ্চিত করেছেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়।
হাসপাতালে ভিড় ও পূর্ব হুমকির তথ্য
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের সামনে হাদির সমর্থক ও উৎসুক জনতার ভিড় জমেছে। হাদির সমর্থকরা দাবি করেছেন যে, নভেম্বর মাস থেকেই দেশি-বিদেশি ৩০টি নম্বর থেকে শরীফ ওসমান বিন হাদি বিভিন্ন ধরনের হুমকি পাচ্ছিলেন।
হামলার কিছুক্ষণ আগেও হাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দেন, যেখানে তিনি লেখেন, “যেহেতু ঢাকা-৮ এ আমার পোস্টার-ফেস্টুন কিছুই নাই, তাই আমার এখন ছেঁড়া-ছিঁড়িরও চাপ নাই। দুদকের সামনে থেইকা জুম্মা মোবারক।” বর্তমানে পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলির স্থানটি ঘিরে রাখা হয়েছে।
এদিকে, গুলিবিদ্ধ প্রার্থীকে দেখতে একই আসনের আরেক প্রার্থী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বিকেল চারটার দিকে ঢামেক হাসপাতালে যান। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সেনাবাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে।

