
ছাত্রদল নেতা নুরু হত্যা মামলা: বহুল আলোচিত ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরু হত্যা মামলায় (২০১৭) দুর্নীতি ও কার্য নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইব্রাহিম খলিলের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। এদিন এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী কারাগার থেকে ভার্চুয়ালি আদালতের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
গত ২৩ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চট্টগ্রাম জেলা মেট্রো ও জেলার ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক নাছির উদ্দীন রাসেল, ফজলে করিম চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলেন।
রাউজানের খবরঃ রাউজানে গরুর ফার্মে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার: ১৫ মামলার আসামি রিপন গ্রেপ্তার
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট রিয়াদ উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালত শুনানি শেষে ৫ দিনের আবেদনের বিপরীতে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর নিহতের স্ত্রী সুমী আক্তার বাদী হয়ে চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। এজাহার অনুযায়ী, এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ রাতেঃ
-
অপহরণঃ এজাহারে বলা হয়েছে, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিমের নির্দেশে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের তৎকালীন সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরুকে ২৯ মার্চ রাতে নগরের চন্দনপুরার বাসা থেকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। রাউজান থানার এসআই শেখ মুহাম্মদ জাবেদ এই অপহরণের ঘটনায় নেতৃত্ব দেন।
-
নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডঃ নুরুলকে মাইক্রোবাসে করে নোয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজের মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চোখ, মুখ ও হাত বেঁধে তাকে সারা রাত ধরে নির্যাতন করা হয়। এরপর তাকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়।
-
লাশ উদ্ধারঃ হত্যার পর লাশটি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে বাগোয়ান ইউনিয়নের খেলারঘাট কর্ণফুলী নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ওপর ফেলে রাখা হয়। পরদিন, ৩০ মার্চ, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নুরুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
রাউজানের আরো খবরঃ রাউজানে আগুনে পুড়ল পাঁচটি পৃথক দোকান, ক্ষতি প্রায় ২০ লাখ টাকা
নুরুল আলম নুরু হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মোট ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন:
-
তৎকালীন রাউজান নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এবং বর্তমানে চুয়েট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জাবেদ।
-
বাবুল মেম্বার, নাসের প্রকাশ টাইগার নাসের, লিটন, তৈয়ব, ফরিদ, মামুন, আবু জাফর রাশেদ, ইয়ার মোহাম্মদ, সেকান্দর, জসিম, খালেদ, বাবুল রব্বানি, হাসান মোহাম্মদ নাসির ও মোর্শেদ।
ফজলে করিম চৌধুরী গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত এলাকা থেকে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টার সময় বিজিবি কর্তৃক আটক হন। এরপর তাকে আখাউড়া থানা ও পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে হেলিকপ্টারযোগে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, হত্যা, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্রের মুখে জমি লিখিয়ে নেওয়া, দখল, এবং অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় বর্তমানে এক ডজনেরও বেশি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

